ঢাকা ০৯:০৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সফল নারী উদ্যোক্তা তানিয়া আফরিন

  • রাকিব খাঁন
  • আপডেট সময় : ০৭:২৫:৫১ অপরাহ্ন, শনিবার, ৬ জানুয়ারী ২০২৪
  • 43

মানুষের উপকারের ইচ্ছা থাকলে সৎ ও সততা দিয়ে সফলতাকে লাভ করা যায়। তাই ফেসবুকের মাধ্যমে নারী উদ্যোক্তা হিসেবে নিজস্ব ব্র্যান্ড ‘তাসা এন্ড তোহা হেয়ার অয়েল’ তৈরি করতে পেরেছেন। আত্মনির্ভরশীল হয়ে অপরকেও এগিয়ে যেতে পথ দেখাচ্ছেন। স্বপ্নের বাস্তবায়নে কোনো বাঁধাই থামিয়ে দিতে পারেনি সফল নারী উদ্যোক্তাকে। বলা হচ্ছে গোপালগঞ্জের তানিয়া আফরিনকে নিয়ে।

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার মেয়ে তানিয়া আফরিন জানান, বিয়ের পর প্রেগন্যান্সি ও চুল রিবন্ডিং করায় মাথার চুল ঝরে পড়তে থাকে। বিভিন্ন নামি-দামি ব্রান্ডের পণ্য ব্যবহার করেও চুলের সমস্যা থেকে মুক্তি পাচ্ছিলেন না। এরইমধ্যে তিনি বিভিন্ন মাধ্যম থেকে তথ্য সংগ্রহ করে নিজে একটি হেয়ার অয়েল তৈরি করেন। যা ব্যবহারে খুব তাড়াতাড়ি তার চুলের সমস্যা কেটে গিয়ে নতুন চুল গজায়। তার আত্মীয়-স্বজনরাও এই হেয়ার অয়েল ব্যবহার করে উপকৃত হয়। তার তৈরি করা হেয়ার অয়েলের সুনাম ছড়িয়ে পড়তে থাকে।

তানিয়া বলেন, এটা নিয়ে ব্যবসা করার কোনো ইচ্ছাই তার ছিলো না। তবে উপকার পাওয়া স্বজনদের অনুপ্রেরণায় বড় পরিসরে হেয়ার অয়েল তৈরি ও বাজারজাত করার চিন্তা করেন। পরে ফেসবুকে হেয়ার অয়েল নিয়ে পোস্ট দেয়া শুরু করেন এবং বিএসটিআই থেকে অনুমতি নিয়ে তা বাজারজাত শুরু করেন।

এই হেয়ার অয়েল ব্যবহারে নারী-পুরুষের চুল পড়ে যাওয়া রোধ ও নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে। তেলের নাম দিয়েছেন তার দুই সন্তানের নামে ‘তাসা অ্যান্ড তোহা হেয়ার অয়েল’। তার ফেসবুকে ব্রান্ড নামে পেজ খুলেন। বর্তমানে এই পেইজের ফলোয়ারের সংখ্যা এক মিলিয়নের বেশি। তার ভিডিওর ভিউ ৫ থেকে ১৬ মিলিয়ন পর্যন্ত।

তানিয়া জানান, বর্তমানে তার নিজস্ব হেয়ার অয়েল তৈরির কারখানা রয়েছে। যেখানে কর্মরত রয়েছেন শত শত মানুষ। রয়েছে দুইটি শো-রুম। একটি গুলশান-১ নম্বরের পুলিশ প্লাজার ৩ নাম্বার লেভেলের ৪৫০ নাম্বার শপে এবং অপরটি নারায়ণগঞ্জের চাষাড়ার আল জয়নাল ট্রেড সেন্টারের দ্বিতীয় তলার ২১৩ নাম্বার শপে। তার অনুপ্রেরণায় নতুন নারী উদ্যোক্তারাও আশান্বিত।

তানিয়া বলেন, ‘আমার বিশ্বাস সৎ ও সততার সাথে মানুষের উপকার করলে সফল হওয়া যায়।’ তানিয়ার আয়ের বেশিরভাগই মসজিদ ও এতিমখানায় দান করা হয়।

‘তিনি ব্যবসা শুরু করেন ২০২০ সালের ডিসেম্বর। কিন্তু ২০২১ সালে তার হেয়ার অয়েলটির জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে তার ফেসবুক পেইজ নকল করে ও তার ভিডিও দিয়ে দুই শতাধিক ফেসবুক পেইজ খুলে নকল পণ্য সরবরাহ করে মানুষের সাথে প্রতারণা করে যাচ্ছিলো একাধিক প্রতারক চক্র। কিন্তু তিনি পিছু হটেননি। পরে তার একাগ্রতা ও সাহসীকতায় আইন প্রয়োগকারী সংস্থা রাজধানী ও চট্টগ্রাম থেকে ১৬ জন প্রতারককে গ্রেপ্তার করতে সমর্থ হয়। তার ব্যবসা শুধুমাত্র ব্যবসাই নয়, এর মাধ্যমে হাজার হাজার মানুষের উপকার করে তাদের দোয়া পেয়েছেন। এটাই তার বড় অনুপ্রেরণা।’ বলছিলেন তিনি।

সফল এ নারী উদ্যোক্তা বলেন, সারা জীবন সত্য ও সততার সাথে মানুষকে সেবা দিয়ে যাবেন, এটাই তার মূলমন্ত্র। সারা দেশে তার হেয়ার অয়েলটি ক্যাশ অন হোম ডেলিভারি দেয়া হয়। বর্তমানে মোট উৎপাদনের তিনগুণ পরিমাণ অর্ডার আসছে। এটাকে একাগ্রতা ও সততার উৎকৃষ্ট উদাহরণ বলে মনে করেন তিনি।

ট্যাগস :

সফল নারী উদ্যোক্তা তানিয়া আফরিন

আপডেট সময় : ০৭:২৫:৫১ অপরাহ্ন, শনিবার, ৬ জানুয়ারী ২০২৪

মানুষের উপকারের ইচ্ছা থাকলে সৎ ও সততা দিয়ে সফলতাকে লাভ করা যায়। তাই ফেসবুকের মাধ্যমে নারী উদ্যোক্তা হিসেবে নিজস্ব ব্র্যান্ড ‘তাসা এন্ড তোহা হেয়ার অয়েল’ তৈরি করতে পেরেছেন। আত্মনির্ভরশীল হয়ে অপরকেও এগিয়ে যেতে পথ দেখাচ্ছেন। স্বপ্নের বাস্তবায়নে কোনো বাঁধাই থামিয়ে দিতে পারেনি সফল নারী উদ্যোক্তাকে। বলা হচ্ছে গোপালগঞ্জের তানিয়া আফরিনকে নিয়ে।

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার মেয়ে তানিয়া আফরিন জানান, বিয়ের পর প্রেগন্যান্সি ও চুল রিবন্ডিং করায় মাথার চুল ঝরে পড়তে থাকে। বিভিন্ন নামি-দামি ব্রান্ডের পণ্য ব্যবহার করেও চুলের সমস্যা থেকে মুক্তি পাচ্ছিলেন না। এরইমধ্যে তিনি বিভিন্ন মাধ্যম থেকে তথ্য সংগ্রহ করে নিজে একটি হেয়ার অয়েল তৈরি করেন। যা ব্যবহারে খুব তাড়াতাড়ি তার চুলের সমস্যা কেটে গিয়ে নতুন চুল গজায়। তার আত্মীয়-স্বজনরাও এই হেয়ার অয়েল ব্যবহার করে উপকৃত হয়। তার তৈরি করা হেয়ার অয়েলের সুনাম ছড়িয়ে পড়তে থাকে।

তানিয়া বলেন, এটা নিয়ে ব্যবসা করার কোনো ইচ্ছাই তার ছিলো না। তবে উপকার পাওয়া স্বজনদের অনুপ্রেরণায় বড় পরিসরে হেয়ার অয়েল তৈরি ও বাজারজাত করার চিন্তা করেন। পরে ফেসবুকে হেয়ার অয়েল নিয়ে পোস্ট দেয়া শুরু করেন এবং বিএসটিআই থেকে অনুমতি নিয়ে তা বাজারজাত শুরু করেন।

এই হেয়ার অয়েল ব্যবহারে নারী-পুরুষের চুল পড়ে যাওয়া রোধ ও নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে। তেলের নাম দিয়েছেন তার দুই সন্তানের নামে ‘তাসা অ্যান্ড তোহা হেয়ার অয়েল’। তার ফেসবুকে ব্রান্ড নামে পেজ খুলেন। বর্তমানে এই পেইজের ফলোয়ারের সংখ্যা এক মিলিয়নের বেশি। তার ভিডিওর ভিউ ৫ থেকে ১৬ মিলিয়ন পর্যন্ত।

তানিয়া জানান, বর্তমানে তার নিজস্ব হেয়ার অয়েল তৈরির কারখানা রয়েছে। যেখানে কর্মরত রয়েছেন শত শত মানুষ। রয়েছে দুইটি শো-রুম। একটি গুলশান-১ নম্বরের পুলিশ প্লাজার ৩ নাম্বার লেভেলের ৪৫০ নাম্বার শপে এবং অপরটি নারায়ণগঞ্জের চাষাড়ার আল জয়নাল ট্রেড সেন্টারের দ্বিতীয় তলার ২১৩ নাম্বার শপে। তার অনুপ্রেরণায় নতুন নারী উদ্যোক্তারাও আশান্বিত।

তানিয়া বলেন, ‘আমার বিশ্বাস সৎ ও সততার সাথে মানুষের উপকার করলে সফল হওয়া যায়।’ তানিয়ার আয়ের বেশিরভাগই মসজিদ ও এতিমখানায় দান করা হয়।

‘তিনি ব্যবসা শুরু করেন ২০২০ সালের ডিসেম্বর। কিন্তু ২০২১ সালে তার হেয়ার অয়েলটির জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে তার ফেসবুক পেইজ নকল করে ও তার ভিডিও দিয়ে দুই শতাধিক ফেসবুক পেইজ খুলে নকল পণ্য সরবরাহ করে মানুষের সাথে প্রতারণা করে যাচ্ছিলো একাধিক প্রতারক চক্র। কিন্তু তিনি পিছু হটেননি। পরে তার একাগ্রতা ও সাহসীকতায় আইন প্রয়োগকারী সংস্থা রাজধানী ও চট্টগ্রাম থেকে ১৬ জন প্রতারককে গ্রেপ্তার করতে সমর্থ হয়। তার ব্যবসা শুধুমাত্র ব্যবসাই নয়, এর মাধ্যমে হাজার হাজার মানুষের উপকার করে তাদের দোয়া পেয়েছেন। এটাই তার বড় অনুপ্রেরণা।’ বলছিলেন তিনি।

সফল এ নারী উদ্যোক্তা বলেন, সারা জীবন সত্য ও সততার সাথে মানুষকে সেবা দিয়ে যাবেন, এটাই তার মূলমন্ত্র। সারা দেশে তার হেয়ার অয়েলটি ক্যাশ অন হোম ডেলিভারি দেয়া হয়। বর্তমানে মোট উৎপাদনের তিনগুণ পরিমাণ অর্ডার আসছে। এটাকে একাগ্রতা ও সততার উৎকৃষ্ট উদাহরণ বলে মনে করেন তিনি।