ঢাকা ০৮:৫৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইসলামের দৃষ্টিতে ভোটের গুরুত্ব অপরিসীম

  • ধর্ম ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৫:৪৬:১৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ৬ জানুয়ারী ২০২৪
  • 14

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বাকি আর মাত্র কয়েক ঘন্টা। রোববার দিনব্যাপী জনগণ ভোটের মাধ্যমে তাদের পছন্দের ব্যক্তিকে নির্বাচিত করবেন। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় দল ও প্রার্থীদের জন্য ভোট হচ্ছে ক্ষমতায় যাওয়ার শক্তিশালী মাধ্যম। যদিও অনেক ভোটারের কাছে ভোটের গুরুত্ব তেমন একটা নেই। তবে সাধারণভাবে এলাকার উন্নয়ন ও কাজ-কর্ম যার দ্বারা বেশি হবে বলে মনে করেন, ভোটাররা তাকেই ভোট দিয়ে থাকেন। ইসলামের দৃষ্টিতে ভোটের গুরুত্ব অপরিসীম।

ভোটের দায়বদ্ধতার বিষয়ে কিয়ামতের দিন প্রত্যেককেই জবাবদিহিতার সম্মুখীন হতে হবে। এ প্রসঙ্গে এক হাদিসে এসেছে, হযরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘সাবধান! তোমরা প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল এবং প্রত্যেককেই (কেয়ামতের দিন) তার দায়িত্ব সম্পর্কে জবাবদিহি করতে হবে। (সহিহ বোখারি ও মুসলিম)

৬ জানুয়ারি ঘটে যাওয়া নানান ঘটনা

ভোট দেশের প্রতিটি নাগরিকের গণতান্ত্রিক অধিকার। ভোট ব্যক্তির নিজস্ব মতামত কিংবা জনমত প্রতিফলনের একটি গণতান্ত্রিক মাধ্যম ও পদ্ধতিবিশেষ। কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণের লক্ষ্যে ভোটের প্রয়োজন হয়। রাজনীতিতে ভোট এমন একটি পদ্ধতি যার মাধ্যমে একজন প্রার্থী গণতান্ত্রিক পন্থায় সরকার ব্যবস্থার কোনো না কোনো পর্যায়ে জনপ্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন।

বিশিষ্ট ইসলামি স্কলার হযরত মুফতি মুহাম্মাদ শফি (রহ.) ভোট সংক্রান্ত একটি পুস্তিকায় লিখেছেন, ইসলামের দৃষ্টিতে ভোট হচ্ছে তিনটি বিষয়ের সমষ্টি। সেগুলো হলো- ১. সাক্ষ্য প্রদান ২. সুপারিশ ও ৩. প্রতিনিধিত্বের ক্ষমতা প্রদান।

ভোটের মাধ্যমে সাক্ষ্য দেয়া হয়:

ভোট প্রদানের মাধ্যমে যে তিনটি (সাক্ষ্য প্রদান, সুপারিশ, প্রতিনিধিত্বের সনদ প্রদান) বিষয় রয়েছে, এর মধ্যে সাক্ষ্যের বিষয়টি মৌলিক। অর্থাৎ কাউকে ভোট দেয়ার অর্থ হলো- তার ব্যাপারে এ সাক্ষ্য প্রদান করা যে, লোকটি ভালো এবং যোগ্য। এখন যদি যথাযথ জায়গায় সিল দিয়ে এ সাক্ষ্য প্রদান করা হয়, তবে সে হবে সত্য সাক্ষী অন্যথায় হবে মিথ্যা সাক্ষী। আর মিথ্যা সাক্ষ্য যে কত বড় কবিরা গোনাহ ও হারাম কাজ তা কি কারো অজানা?

মিথ্যা সাক্ষী থেকে সাবধান:

হযরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কঠিন ভাষায় মিথ্যা ও মিথ্যা সাক্ষ্যের নিন্দা করেছেন। সহিহ বোখারির এক বর্ণনায় আছে, হজরত আবু বকর (রা.) বলেন, হযরত রাসূলুল্লাহ (সা.) একদা এক জায়গায় হেলান দিয়ে বসা অবস্থায় তিন তিনবার সাহাবিদের জিজ্ঞাসা করলেন, আমি কি তোমাদেরকে কবিরা গোনাহগুলোর মধ্যে বড় কবিরা গোনাহের কথা বলব? সাহাবিরা হ্যাঁ সূচক উত্তর দেওয়ার পর তিনি বললেন, আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরিক করা, পিতা-মাতার অবাধ্যতা (এ দু’টি কথা বলার পর তিনি সোজা হয়ে বসলেন) এবং বললেন, শুনে নাও! মিথ্যা সাক্ষ্য অনেক বড় কবিরা গোনাহ।

সুনানে তিরমিজির একটি হাদিসে মিথ্যা সাক্ষ্যকে শিরকের সমান অপরাধ বলা হয়েছে। হাদিস বিশারদ শামসুদ্দীন যাহাবি (রহ.) মিথ্যা সাক্ষ্যকে চারটি বড় গোনাহের সমষ্টি বলে আখ্যা দিয়েছেন। সেগুলো হচ্ছে- নিজে মিথ্যা ও অপবাদ আরোপ করছে, ২. যার বিরুদ্ধে সাক্ষী দিচ্ছে তার ওপর জুলুম করছে, ৩. যার পক্ষে মিথ্যা সাক্ষ্য দিচ্ছে তার ওপরও প্রকৃতপক্ষে জুলুম করছে কারণ, সে যা কিছু পাওয়ার যোগ্য ছিল না এ ব্যক্তি মিথ্যা সাক্ষ্যের মাধ্যমে তাকে এর অধিকারী করে তুলছে এবং এভাবে তাকে করছে জাহান্নামী ও ৪. মিথ্যা সাক্ষ্যদাতার একটি হালাল কাজকে হারাম বানিয়ে নেয়া।

মিথ্যা ও অবাস্তব সাক্ষ্যের ক্ষতি ও খেসারত বলে শেষ করার মতো নয়। হকদার অধিকার থেকে বঞ্চিত হওয়া, অযোগ্যদের উত্থান, দুর্নীতিবাজ ও শোষকের ক্ষমতায়ন। এ সবই মিথ্যা সাক্ষ্যের ক্ষতি। এর কারণে নীতিবান, যোগ্য, সৎ ও আমানতদাররা নিরবতা পালন করে রাষ্ট্র ও জনগণের সেবা থেকে নিজেদের দূরে রাখতে বাধ্য হন।

ভোট বর্জনের কোনো সুযোগ নেই:

ওপরের আলোচনার পর মনে প্রশ্ন আসতে পারে, তা হলে তো অনেক আসনের প্রার্থীদের ভোট দেয়া সম্ভব নয়। কারণ, এমন লোক পাওয়া যাবে না, যার সপক্ষে সাক্ষ্য প্রদান করা যায় এবং এ কারণে অনেকে ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকেন, এমনকি বহু লোক ভোটার হতেও ইচ্ছুক হন না।

সাধারণ বিবেচনায় এ চিন্তা যুক্তিযুক্ত মনে হলেও এক্ষেত্রে কিন্তু ভিন্ন যুক্তিও রয়েছে। তা হচ্ছে, মন্দের ভালো বা তুলনামূলক কম ক্ষতিকে বেছে নেয়া এবং অধিক ক্ষতি থেকে বাঁচার চেষ্টা করা। বর্তমানে ভোটকে এ দৃষ্টিকোণ থেকেই বিবেচনায় আনতে হবে এবং ভোটের মাধ্যমে অধিক ক্ষতি থেকে বাঁচার চেষ্টা করতে হবে। কোনো আসনে একজন লোককেও যদি সাক্ষ্য ও ভোট দেয়ার উপযুক্ত মনে না হয় তবে তাদের মধ্যে যে জন নীতি-নৈতিকতা, চিন্তা-চেতনা ও কাজে-কর্মে অন্য প্রার্থীর তুলনায় কম খারাপ তাকেই ভোট দিতে হবে। তবে, কারও ব্যাপারে যদি ইসলাম-দেশ ও জনগণের স্বার্থ-বিরোধী হওয়ার সুস্পষ্ট দলিল থাকে তবে ওই অসৎ ব্যক্তির বিজয় ঠেকানোর চেষ্টা করতে হবে ভোটারাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে।

মোটকথা, ইসলাম মতে নির্বাচন পদ্ধতির যতই ভুল থাকুক এর কারণে ভোটদানে বিরত থাকা সমীচীন হবে না; বরং বুদ্ধি-বিবেচনা খরচ করে, ভেবে-চিন্তে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে হবে ভালো-মন্দের ভালো অথবা অন্তত কম মন্দের পক্ষে।

এ ক্ষেত্রে ইসলামি শরিয়তের দৃষ্টিতে কাউকে ভোটদানের অর্থ হবে, এ সাক্ষ্য দয়া যে, লোকটি তার প্রতিদ্বন্দ্বীদের তুলনায় কিছুটা হলেও ভালো। ভোটকে নিছক একটি সিল মনে করা ঠিক না। ভোটদানের সময় ভাবতে হবে কোন প্রার্থী বা দলকে ভোট দিলে দুনিয়া ও আখেরাতে কল্যাণ হবে। আমাদের গাড়ির ড্রাইভার নিয়োগের জন্য অবশ্যই কোনো মাতাল, নেশাখোরকে নিয়োগ দেই না, অনুরূপ যারা আমাদের নেতা হবেন বা আইন প্রয়োগে মুখ্য ভূমিকা পালন করবেন তিনি যদি অসৎ, আল্লাহবিমুখ, অদক্ষ ও অযোগ্য হন- তাহলে শুধু সে নিজেই ক্ষতিগ্রস্ত হবে না, ক্ষতি করবে পুরো সমাজ, রাষ্ট্র ও জাতিসত্তাকে।

ট্যাগস :

ইসলামের দৃষ্টিতে ভোটের গুরুত্ব অপরিসীম

আপডেট সময় : ০৫:৪৬:১৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ৬ জানুয়ারী ২০২৪

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বাকি আর মাত্র কয়েক ঘন্টা। রোববার দিনব্যাপী জনগণ ভোটের মাধ্যমে তাদের পছন্দের ব্যক্তিকে নির্বাচিত করবেন। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় দল ও প্রার্থীদের জন্য ভোট হচ্ছে ক্ষমতায় যাওয়ার শক্তিশালী মাধ্যম। যদিও অনেক ভোটারের কাছে ভোটের গুরুত্ব তেমন একটা নেই। তবে সাধারণভাবে এলাকার উন্নয়ন ও কাজ-কর্ম যার দ্বারা বেশি হবে বলে মনে করেন, ভোটাররা তাকেই ভোট দিয়ে থাকেন। ইসলামের দৃষ্টিতে ভোটের গুরুত্ব অপরিসীম।

ভোটের দায়বদ্ধতার বিষয়ে কিয়ামতের দিন প্রত্যেককেই জবাবদিহিতার সম্মুখীন হতে হবে। এ প্রসঙ্গে এক হাদিসে এসেছে, হযরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘সাবধান! তোমরা প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল এবং প্রত্যেককেই (কেয়ামতের দিন) তার দায়িত্ব সম্পর্কে জবাবদিহি করতে হবে। (সহিহ বোখারি ও মুসলিম)

৬ জানুয়ারি ঘটে যাওয়া নানান ঘটনা

ভোট দেশের প্রতিটি নাগরিকের গণতান্ত্রিক অধিকার। ভোট ব্যক্তির নিজস্ব মতামত কিংবা জনমত প্রতিফলনের একটি গণতান্ত্রিক মাধ্যম ও পদ্ধতিবিশেষ। কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণের লক্ষ্যে ভোটের প্রয়োজন হয়। রাজনীতিতে ভোট এমন একটি পদ্ধতি যার মাধ্যমে একজন প্রার্থী গণতান্ত্রিক পন্থায় সরকার ব্যবস্থার কোনো না কোনো পর্যায়ে জনপ্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন।

বিশিষ্ট ইসলামি স্কলার হযরত মুফতি মুহাম্মাদ শফি (রহ.) ভোট সংক্রান্ত একটি পুস্তিকায় লিখেছেন, ইসলামের দৃষ্টিতে ভোট হচ্ছে তিনটি বিষয়ের সমষ্টি। সেগুলো হলো- ১. সাক্ষ্য প্রদান ২. সুপারিশ ও ৩. প্রতিনিধিত্বের ক্ষমতা প্রদান।

ভোটের মাধ্যমে সাক্ষ্য দেয়া হয়:

ভোট প্রদানের মাধ্যমে যে তিনটি (সাক্ষ্য প্রদান, সুপারিশ, প্রতিনিধিত্বের সনদ প্রদান) বিষয় রয়েছে, এর মধ্যে সাক্ষ্যের বিষয়টি মৌলিক। অর্থাৎ কাউকে ভোট দেয়ার অর্থ হলো- তার ব্যাপারে এ সাক্ষ্য প্রদান করা যে, লোকটি ভালো এবং যোগ্য। এখন যদি যথাযথ জায়গায় সিল দিয়ে এ সাক্ষ্য প্রদান করা হয়, তবে সে হবে সত্য সাক্ষী অন্যথায় হবে মিথ্যা সাক্ষী। আর মিথ্যা সাক্ষ্য যে কত বড় কবিরা গোনাহ ও হারাম কাজ তা কি কারো অজানা?

মিথ্যা সাক্ষী থেকে সাবধান:

হযরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কঠিন ভাষায় মিথ্যা ও মিথ্যা সাক্ষ্যের নিন্দা করেছেন। সহিহ বোখারির এক বর্ণনায় আছে, হজরত আবু বকর (রা.) বলেন, হযরত রাসূলুল্লাহ (সা.) একদা এক জায়গায় হেলান দিয়ে বসা অবস্থায় তিন তিনবার সাহাবিদের জিজ্ঞাসা করলেন, আমি কি তোমাদেরকে কবিরা গোনাহগুলোর মধ্যে বড় কবিরা গোনাহের কথা বলব? সাহাবিরা হ্যাঁ সূচক উত্তর দেওয়ার পর তিনি বললেন, আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরিক করা, পিতা-মাতার অবাধ্যতা (এ দু’টি কথা বলার পর তিনি সোজা হয়ে বসলেন) এবং বললেন, শুনে নাও! মিথ্যা সাক্ষ্য অনেক বড় কবিরা গোনাহ।

সুনানে তিরমিজির একটি হাদিসে মিথ্যা সাক্ষ্যকে শিরকের সমান অপরাধ বলা হয়েছে। হাদিস বিশারদ শামসুদ্দীন যাহাবি (রহ.) মিথ্যা সাক্ষ্যকে চারটি বড় গোনাহের সমষ্টি বলে আখ্যা দিয়েছেন। সেগুলো হচ্ছে- নিজে মিথ্যা ও অপবাদ আরোপ করছে, ২. যার বিরুদ্ধে সাক্ষী দিচ্ছে তার ওপর জুলুম করছে, ৩. যার পক্ষে মিথ্যা সাক্ষ্য দিচ্ছে তার ওপরও প্রকৃতপক্ষে জুলুম করছে কারণ, সে যা কিছু পাওয়ার যোগ্য ছিল না এ ব্যক্তি মিথ্যা সাক্ষ্যের মাধ্যমে তাকে এর অধিকারী করে তুলছে এবং এভাবে তাকে করছে জাহান্নামী ও ৪. মিথ্যা সাক্ষ্যদাতার একটি হালাল কাজকে হারাম বানিয়ে নেয়া।

মিথ্যা ও অবাস্তব সাক্ষ্যের ক্ষতি ও খেসারত বলে শেষ করার মতো নয়। হকদার অধিকার থেকে বঞ্চিত হওয়া, অযোগ্যদের উত্থান, দুর্নীতিবাজ ও শোষকের ক্ষমতায়ন। এ সবই মিথ্যা সাক্ষ্যের ক্ষতি। এর কারণে নীতিবান, যোগ্য, সৎ ও আমানতদাররা নিরবতা পালন করে রাষ্ট্র ও জনগণের সেবা থেকে নিজেদের দূরে রাখতে বাধ্য হন।

ভোট বর্জনের কোনো সুযোগ নেই:

ওপরের আলোচনার পর মনে প্রশ্ন আসতে পারে, তা হলে তো অনেক আসনের প্রার্থীদের ভোট দেয়া সম্ভব নয়। কারণ, এমন লোক পাওয়া যাবে না, যার সপক্ষে সাক্ষ্য প্রদান করা যায় এবং এ কারণে অনেকে ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকেন, এমনকি বহু লোক ভোটার হতেও ইচ্ছুক হন না।

সাধারণ বিবেচনায় এ চিন্তা যুক্তিযুক্ত মনে হলেও এক্ষেত্রে কিন্তু ভিন্ন যুক্তিও রয়েছে। তা হচ্ছে, মন্দের ভালো বা তুলনামূলক কম ক্ষতিকে বেছে নেয়া এবং অধিক ক্ষতি থেকে বাঁচার চেষ্টা করা। বর্তমানে ভোটকে এ দৃষ্টিকোণ থেকেই বিবেচনায় আনতে হবে এবং ভোটের মাধ্যমে অধিক ক্ষতি থেকে বাঁচার চেষ্টা করতে হবে। কোনো আসনে একজন লোককেও যদি সাক্ষ্য ও ভোট দেয়ার উপযুক্ত মনে না হয় তবে তাদের মধ্যে যে জন নীতি-নৈতিকতা, চিন্তা-চেতনা ও কাজে-কর্মে অন্য প্রার্থীর তুলনায় কম খারাপ তাকেই ভোট দিতে হবে। তবে, কারও ব্যাপারে যদি ইসলাম-দেশ ও জনগণের স্বার্থ-বিরোধী হওয়ার সুস্পষ্ট দলিল থাকে তবে ওই অসৎ ব্যক্তির বিজয় ঠেকানোর চেষ্টা করতে হবে ভোটারাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে।

মোটকথা, ইসলাম মতে নির্বাচন পদ্ধতির যতই ভুল থাকুক এর কারণে ভোটদানে বিরত থাকা সমীচীন হবে না; বরং বুদ্ধি-বিবেচনা খরচ করে, ভেবে-চিন্তে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে হবে ভালো-মন্দের ভালো অথবা অন্তত কম মন্দের পক্ষে।

এ ক্ষেত্রে ইসলামি শরিয়তের দৃষ্টিতে কাউকে ভোটদানের অর্থ হবে, এ সাক্ষ্য দয়া যে, লোকটি তার প্রতিদ্বন্দ্বীদের তুলনায় কিছুটা হলেও ভালো। ভোটকে নিছক একটি সিল মনে করা ঠিক না। ভোটদানের সময় ভাবতে হবে কোন প্রার্থী বা দলকে ভোট দিলে দুনিয়া ও আখেরাতে কল্যাণ হবে। আমাদের গাড়ির ড্রাইভার নিয়োগের জন্য অবশ্যই কোনো মাতাল, নেশাখোরকে নিয়োগ দেই না, অনুরূপ যারা আমাদের নেতা হবেন বা আইন প্রয়োগে মুখ্য ভূমিকা পালন করবেন তিনি যদি অসৎ, আল্লাহবিমুখ, অদক্ষ ও অযোগ্য হন- তাহলে শুধু সে নিজেই ক্ষতিগ্রস্ত হবে না, ক্ষতি করবে পুরো সমাজ, রাষ্ট্র ও জাতিসত্তাকে।